
জমে উঠেছে ডাকসু নির্বাচন আত্মবিশ্বাসী স্বতন্ত্রদের টার্গেট সাধারণ শিক্ষার্থীরা


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঝে চলছে টান টান উত্তেজনা। প্রচারণার অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
এদিকে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল, ছাত্র শিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাম জোটসহ আটটি প্যানেল রয়েছে। এর বাইরেও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন অনেকে। তাদেরও রয়েছে বড় প্রত্যাশা। দলীয় কোনও ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও যে যার জায়গা থেকে জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে ডাকসুতে জয়লাভের বিষয়ে তারাও আত্মবিশ্বাসী। তারা টার্গেট করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের। তবে এককভাবে নির্বাচন করছেন এমন কয়েকজন তাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। তাদের মধ্যে সহ সভাপতি (ভিপি) পদে (স্বতন্ত্রভাবে) নির্বাচন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী শামীম হোসেন। একপ্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়িয়েছি কারণ বাইরের দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে স্টুডেন্ট ইউনিয়নগুলো রয়েছে সেখানে কিন্তু দলীয় প্যানেল নাই। আমি একজন ছাত্র এবং আমি শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত হবো। শিক্ষার্থীদের তো এরকম কর্মী বা লোক থাকার দরকার নেই। ফলে স্টুডেন্টরা যাকে পছন্দ করবে তাকেই নির্বাচিত করবে। এই কনসেপ্ট নিয়েই আমি দাঁড়িয়েছি। তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থী। সেক্ষেত্রে যারা সত্যিকারের সাধারণ শিক্ষার্থী তারা আমার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। কারণ আমি বলেছি, আমি ভিপি নির্বাচিত হলে নির্বাচিত হবে প্রতিটা শিক্ষার্থী।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্যানেল থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্রভাবে সহ সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে নির্বাচন করছেন সংগঠনটির মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী। তিনি বলেন, আমার মনে হয় এজিএস পদে নির্বাচন করলে আমি জয়ী হয়ে আসতে পারবো। এখানে সংগঠন আমাকে দেয়নি, এ জন্য আমি স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়িয়েছি। এখানে কোনও বিধিনিষেধ ছিল না। তিনি বলেন, আমার জনপ্রিয়তা আছে, কাজ করার ইচ্ছা আছে। সুতরাং স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়িয়ে আমি যদি হয়ে আসতে পারি, আমি আমার ইশতেহার অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাবো। এই পদে আমি শিক্ষার্থীদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। এই পদে সহজেই নির্বাচিত হয়ে আসবো বলে আশাবাদী। স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাবি শাখার মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম। তিনিও এজিএস পদেই নির্বাচন করছেন। তিনি বলেন, প্যানেল থেকে আমি আশানুরূপ পদ পাইনি। আমি জানি আমি এজিএস পদে স্বতন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে পারবো। কারণ শিক্ষার্থীরা আমাকে ব্যক্তি হাসিব হিসেবেই চেনে। দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে আমাকে দেখে সবাই অভ্যস্ত। সুতরাং এই নির্বাচনের জন্য আমার কোনও প্যানেল দরকার নেই। তিনি বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করতে চাই। অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে শুরু থেকেই আছি। সুতরাং এই কাজের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং প্রশাসনের সঙ্গে সহজে ডিল করতে নির্বাচনে আসা। এখনও পর্যন্ত ভালো সাড়া পাচ্ছি।
‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি কুইজ সোসাইটি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহতাসিন বিল্লাহ ইমন বলেন, একজন সংস্কৃতি কর্মী ও সংগঠক হিসেবে কাজের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় আমি জানি, এই সেক্টরটা কতটা অবহেলার স্বীকার এবং এই সেক্টরে পর্যাপ্ত প্রশাসনিক এন্ডোর্সমেন্ট এনশিওর করাই আমার লক্ষ্য। একইসঙ্গে নববর্ষ ও দুর্গাপূজার ছুটি নিয়ে যে বৈষম্যমূলক আচরণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, তার যৌক্তিক সমাধান করতে চাই। স্বতন্ত্র থেকে সদস্য পদে নির্বাচন করছেন, ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান রিদম। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ইস্যুতে সরব থাকার চেষ্টা করেছি এবং সেই ভিত্তিতে জুলাই বিপ্লবে আহত এবং গ্রেফতার হই। বিপ্লব পরবর্তী সময়ে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। হল ও ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেছি। তিনি বলেন, যেহেতু আমার প্রথম এবং প্রধান পরিচয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-সেজন্য আমি মনে করি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন করলে আমার কোনো দলীয় পরিচয়ের দরকার হবে না। সেই কারণে আমি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছি এবং সফল কিংবা ব্যর্থ যাই হই-আজীবন এই ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের জন্য লড়ে যাবো।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ